নির্বাচনী সহিংসতায় আওয়ামী লীগের ১২ নেতাকর্মী নিহত

নিউজ ডেস্ক:: নির্বাচনী সংঘর্ষে গত তিনদিন ও আজ রবিবার ভোটের দিন মোট ১২ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

২৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের পাঁচ কর্মী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৭০ জন।’ এর বাইরে গতরাত ও আজ রবিবার নির্বাচন চলাকালে আওয়ামী লীগের আরো সাতজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

২৯ ডিসেম্বর রাতে চট্টগ্রামের পটিয়ায় সংঘর্ষে এক আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানা যায়। এদিকে নির্বাচন চলাকালীন রাজশাহী, দিনাজপুর, রাঙামাটি, কক্সবাজার, নরসিংদী ও বগুড়ায় একজন করে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হন। এদের মধ্যে রবিবার সকাল সাতটায় রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের সংঘর্ষে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাসের উদ্দিন (৩৬) নিহত হন। অন্যদিকে রাজশাহী-৩ আসনের মোহনপুরের পাকুড়িয়া হাইস্কুল কেন্দ্রের সামনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে মেরাজউদ্দিন (২২) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হন। রাজশাহী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, ‘মোহনপুরে বিএনপির কর্মীরা আওয়ামী লীগের ওই কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।’

দিনাজপুরে সহগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে দুপুর ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা কর্মী মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কিনা মোহাম্মদ (৬৫) নামে এক আওয়ামী লীগ সমর্থকের মৃত্যু হয়।

কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার রাজাখালী উলুদিয়া এলাকায় মো. আবদুল্লাহ নামের এক নৌকার সমর্থক ভোট দিতে গিয়ে সংঘষের্র মধ্যে পড়ে মারা গেছেন। মাতবরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজ সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন।

নরসিংদী জেলার শিবপুরের কুন্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট মিলন মিয়া (৫৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

বগুড়ার কাহালুতে একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে সংঘর্ষে আজিজুল নামের এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। তিনি পায়কর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহসভাপতি। আজিজুলের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

কয়েকদিনে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নির্বাচনী ক্যাম্প ও মিছিলে হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে গত বুধবার রাতে চন্দনাইশের বরমা ইউনিয়নের কেশুয়ায় ও দুপুরে চর বরমায় আওয়ামী লীগের দু’টি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। ২৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ-বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে। এসময় দুটি মোটরসাইকেল ও তিনটি পিকআপ ভাঙচুর করা হয়। রংপুরের পীরগাছায় বুধবার রাতে নগরজিত্পুরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে দুর্বৃত্তরা হামলা, ভাঙচুর করেছে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সুন্দপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের আলাইপুর জামতলা বাজারে আওয়ামী লীগের প্রচার অফিসসহ ৩টি দোকান আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় বুধবার রাতে উপজেলার পুটিজানায় ময়নার বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্র ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরেও উপজেলার গাজীরচর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. জুয়েল মিয়ার বাড়িতে দুর্বৃত্তরা বুধবার রাতে আগুন দিয়েছে। একই দিন সংঘর্ষে আহত যুবলীগ নেতা রফিক মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এখনো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আওয়ামী লীগের কর্মী, সমর্থক ও নেত্রীবৃন্দের ওপর হামলার খবরাখবর মিলছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *