সিলেটে প্রিপেইড মিটার গ্রাহকরা চরম ভোগান্তির শিকার….

সাহেদ আহমদ:: সম্পতি প্রিপেইড মিটারে কার্ড ব্যবস্থা গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে করা হলেও এটা গ্রাহকদের কাছে হয়ে উঠেছে চরম ভোগান্তি ও সময় অপচয়ের মাধ্যম! সরজমিনে সিলেট উপশহর এলাকায় গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়ানো বিদ্যুত গ্রাহক ফয়সল আহমদ জানালেন, তিনি সকাল সাড়ে ১১টায় লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কার্ড রিচার্জ করতে কয়টা বাজবে, না আজকে দিতে পারবেন এই নিশ্চয়তা দিতে পারতেছেন না।

এই চিত্র কয়েকমাস ধরেই চলছে। যেদিন কার্ড রিচার্জ দিতে আসেন ওই দিন আর কোন কাজ হাতে রাখা যায় না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কিভাবে সহজ হবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা নেই। কার্ড রিচার্জের বিষয়টি কঠিন করে তোলা হয়েছে।সাধারণত বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে মাস শেষে বিল নিয়ে ওই বিল নিজেই ব্যাংকে জমা দিত। এখন এই পরিস্থিতি বদলে গেছে। যারা প্রিপেইড কার্ড ব্যবহার করেন তাদের বিদ্যুত ব্যবহারের আগেই কার্ড রিচার্জ করতে হয়। আর প্রিপেইড মিটারে কার্ড সংযোজনের পর বাড়িওয়ালা বিল দেয়ার দায়িত্ব ভাড়াটিয়ার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। টাকা শেষ হওয়ার আগেই মিটারে পুনঃরিচার্জ করা সম্ভব না হলে ঘরের বাতি নিভে যায়। পাখাও ঘোরে না। সঙ্গত কারণে গ্রাহক বাধ্য হয় বিল দিতে। কিন্তু সমস্যাটি হচ্ছে প্রিপেইড মিটারের কার্ড প্রত্যেক গ্রাহক রিচার্জ দিতে যাচ্ছেন।

এতে বিল দিতে লোকসংখ্যা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।ডিপিডিসি বলছে, এখন পর্যন্ত তাদের দুই লাখ ৫০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারে কার্ড দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ এই আড়াই লাখ গ্রাহকই প্রতি মাসে রিচার্জ করতে যান। নিজস্ব ভেন্ডিং স্টেশনের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে দিয়ে প্রিপেইড মিটারের অর্থ আদায় করে ডিপিডিসি। দেশের ২৬ টি ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে তাদের। তবে সম্প্রতি বিল আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে ডিপিডিসি অর্থ তাদের অধীনে নিয়ে যেতে চাওয়াতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকগুলোতে কার্ড রিচার্জ দেওয়ার জন্য যে রিসিট সরবরাহ করতে হয় ডিপিডিসি তা সরবরাহ করে থাকে। কোন কোন সময় ব্যাংকে ওই রিসিট না থাকলে কার্ড রিচার্জ বন্ধ রাখা হয়। যেহেতু আর্থিক সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর মতবিরোধ রয়েছে তাই এসব ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে।জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, প্রিপেইড মিটারে ভোগান্তির বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

এখানে বিল দেয়ার ক্ষেত্রে যে জটিলতা তৈরি হচ্ছে তা দেখেই আমরা পেমেন্ট গেট ওয়ে তৈরি করছি। দেশে মোবাইলে যেভাবে রিচার্জ করা হয় একইভাবে পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে গ্রাহক বিল দিতে পারবেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়েছে। তবে এখনও কিছুটা সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।এছাড়াও জানতে চাওয়ায় ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক (হিসাব) গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রিপেইড মিটার নতুন সংযোজন। শুরুতে নতুন কিছু আসলেই কিছু সমস্যা তৈরি হয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি সমস্যার সমাধান করতে।

এজন্য একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। অন্য আরও মোবাইল ফোন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হবে। আশা করছি এই সমস্যা আর দীর্ঘ সময় থাকবে না।

সূত্র মতে বিতরণ কোম্পানির উদাসীনতা ও বিদ্যুত বিল আদায় সহজ না করে প্রিপেইড মিটারে কার্ড ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহক। বিদ্যুত ব্যবহারের আগেই কার্ড রিচার্জ করতে ভোগান্তির শিকার গ্রাহককে উদ্ধারের কথা বলা হলেও এখনও কার্যকর কিছু গ্রহণ করা হয়নি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *