মায়ের সাথে অভিমান করে ১২বছরের বাচ্চা ওড়না দিয়ে গলায় ফাসঁ লাগিয়ে আত্মহত্যা

আজিজুল ইসলাম সজীব:: নবীগঞ্জে মা’য়ের সাথে অভিমান করে মুহিন চন্দ্র চৌধুরী (১২) নামের এক স্কুল ছাত্র গলায় ফাসঁ লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত মুহিন শহরের ওয়ার্কসপ ব্যবসায়ী নারায়ন চন্দ্র চৌধুরীর একমাত্র ছেলে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শহরের ওসমানী রোডস্থ ভাড়াটে বাসায় এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গতকাল শুক্রবার হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

সুত্রে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা ইউনিয়নের গুগড়াপুর গ্রামের নারায়ন চন্দ্র চৌধুরী প্রায় ১০/১২ বছর ধরে নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডস্থ রত্না ভিলার ৩য় তলায় একটি রুমে ভাড়ায় থাকেন এবং ওই সড়কে তার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপের দোকান রয়েছে। তার একমাত্র ছেলে মুহিন চৌধুরী গেল বছর নবীগঞ্জ জেকে হাইস্কুল থেকে ৬ষ্ট শ্রেণীতে পরীক্ষা দিলে অকৃতকার্য হয়। ফলে পুণরায় এ বছরও ৬ষ্ট শ্রেণীতে ভর্তি হয়। ছেলের লেখাপড়ায় অমনোযোগী থাকায় তার মা মাঝে মধ্যে শাসন করতেন। গত বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীক কাজে তার বাবা নারায়ন চৌধুরী ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। সন্ধ্যায় পড়ার জন্য তার মা শাসন করেন। রাত প্রায় ১১ টার দিকে মুহিনের মা বাসার ছাদের উপর যান। সেখান থেকে ফিরে এসে ছেলে মুহিন চৌধুরী ঘরের ফ্যানের সাথে মায়ের ওড়না দিয়ে গলায় ফাসঁ লাগানো অবস্থায় দেখতে পান।

পরে তার সুরচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে রাত ১১.৫৫ ঘটিকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মফিজুল হক মৃত মুহিনের ছুরতহাল তৈরী করে থানায় নিয়ে আসেন এবং ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেন। এছাড়া ওসি (তদন্ত) মোঃ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রতিবেশীরা জানান, রতœা ভিলার ৩য় তলায় দীর্ঘ ১০/১২ বছর ধরে নারায়ন চৌধুরী, তার স্ত্রী এবং একমাত্র ছেলে মুহিন চৌধুরী একটি রুমে ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করতেন। পাশের রুমে থাকেন পল্লী বিদ্যুত অফিসে কর্মরত ৪ যুবক। ঘটনার দিন ওই ৪ যুবকও বাসায় ছিলেন না। আত্মহত্যার খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা মুহিনের বাসায় গেলে দেখতে পান মুহিন চৌধুরী ঘরের দেয়ালে নিজ হাতে লিখেছেন “যখন আমি থাকবো নাকো, আমায় রেখ মনে”। কবিতার এই লাইনটি ঘটনার কিছুদিন আগে লেখা হয়েছে বলেও প্রতিবেশীতের ধারনা। অপর একটি সুত্রে জানা যায়, নিহত মুহন চৌধুরীর মা দিবারাত্রি ভাড়াটে বাসার ছাদের উপর ঘনঘন আসা যাওয়া করতেন। কিন্তু কেন যেতেন এ বিষয়টি স্পষ্ট করে কেউ বলতে পারেন নি। ধারনা করা যাচ্ছে, মা’য়ের শাসনের কারনেই হয়তো বা মুহিন চৌধুরী অভিমান করে আত্মহননের পথ বেচেঁ নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ওসি (তদন্ত) বলেন, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা মর্মে ধারনা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রির্পোট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারন নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ব্যাপারে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *