ক্ষমতাসীনরা জোর করে বিজয় ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছে : রিজভী

নিউজ ডেস্ক:: নির্বাচন কমিশন-ইসি মুক ও বধির হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম থেকে সরকারের নীল নকশার নির্বাচন নিয়ে আমরা যে অভিযোগগুলো করেছিলাম সেটিরই নগ্ন বহি:প্রকাশ তিন সিটিতেই ফুটতে শুরু করেছে। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের জন্যই সরকার তিন সিটির ভোট নিয়ে অনাচারের লিপ্ত হতে পেরেছে। নির্বাচন কমিশন উচিৎ-অনুচিতের এথিক্সের ধার ধারেনি বলেই নির্বিকার থাকছে এবং নৌকার প্রার্থীকে ভোট ডাকাতিতে উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের অসংখ্য অনিয়ম ও নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ কমিশন কানে তোলেনি।

কমিশন মুক ও বধির হয়ে গেছে। অবৈধ সরকার ও মেরুদন্ডহীন নির্বাচন কমিশন অনিবার্য সম্বন্ধসুত্রে গ্রোথিত।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এরা কখনোই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেবে না। কেন্দ্র দখল, বিরোধী দলের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেয়া, জালভোটে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করার ‘হাসিনা মার্কা’ নির্বাচনকেই বাংলাদেশের নির্বাচনের মানদন্ড করা হয়েছে। শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন ততদিনই এই মানদন্ড অনুযায়ী নির্বাচন হবে। ক্ষমতাসীনরা অহংকার আর উন্মত্ততায় বিচার বুদ্ধি হারিয়ে ক্ষমতামায়ায় হিংস্র হয়ে নির্বাচনী বিজয় জোর করে ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছে। আর আত্মাবিক্রিকারি নির্বাচন কমিশন ভোট শেষে অনুশোচনাহীন চরম মিথ্যাচার করে বিবৃতি দিবে। অবৈধ সরকারকে খুশী করতে নির্বাচন কমিশন নিজেদের স্বাধীন ক্ষমতাকে নিজেরাই হরণ করেছে। নির্বাচন কমিশন এখন একটি প্যারাসাইট। বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিপক্ষ।

তিন সিটিতে ভোট গ্রহণে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, রাজশাহীতে ওসি কামাল বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুকে ধাক্কাধাক্কি করে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু এবং মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিলনকেও ওসি কামাল ধাক্কা মেরে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। দাসমারীতে ধানের শীষের সমর্থক বজলুর রহমান মন্টু, রাজীব হোসেন, সাইফুর রহমান ডিকেন এবং আব্দুল আউয়ালকে মেরে গুরুতর আহত করেছে আওয়ামী ক্যাডার’রা। প্রায় সকল কেন্দ্র থেকেই ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। পুঠিয়া-দুর্গাপুরের আব্দুল ওয়াদুদ দারা গতকাল রাজশাহী অলকা মোড়ে গতকাল সন্ধ্যায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন। রাজশাহীর আশপাশের উপজেলাগুলো থেকে হাজার হাজার লোক আনা হয়েছে। ১ নং ওয়ার্ডের গুলজারবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কেন্দ্রের মহিলা এজেন্টদের কাউকেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়নি। ২ নং ওয়ার্ডের কোট কলেজ কেন্দ্রে সকল এজেন্টদের ভোট শুরু হওয়ার এক ঘন্টা পরে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়।

বরিশালে মজিদুন নেসা ভোট কেন্দ্র এবং বরিশাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ধানের শীষের ব্যাজ লাগিয়ে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট’রা কাজ করছে। ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সারোয়ারকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ছাত্রলীগ ও পুলিশ প্রশাসনের নেতৃত্বে ধানের শীষের সব এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। ১৫ নং ওয়ার্ডে ধানের শীষের এজেন্ট আলমাস ও সুমনকে মারধর করে আহত করা হয়েছে, তারা দু’জনেই এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সিলেটে ২০ নং ওয়ার্ডের এমসি কলেজ কেন্দ্রে সকাল ৮.৪৫ মিনিটে দিপক রায়, টিটন মল্লিকসহ ধানের শীষের প্রার্থীর সকল এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। ২১ নং ওয়ার্ডের চান্দুশাহ ভোটকেন্দ্র সকাল ৮.৪০ মিনিট থেকে ধানের শীষ প্রার্থীর সমর্থিত সকল এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। আলমগীরসহ সবাইকে।

২০ নং ওয়ার্ডের হাতিম আলী হাইস্কুল কেন্দ্র ৮.৪৫ মিনিট থেকে ধানের শীষের প্রার্থীর এজেন্ট রোজেল আহমেদ চৌধুরীসহ সকলকে বের করে দিয়েছে। ।

ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের, যুগ্ম মহাসচিব খায়ররুল কবির খোকন, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *