নিউজ ডেস্ক:: ‘আমার দ্বিতীয় স্বামীর মাধ্যমে ইয়াবার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। সে আমাকে অনেক ভালোবাসতো। একদিন সে বাড়িতে অনেক ইয়াবা নিয়ে আসে।’
এভাবেই স্বামীর মাধ্যমে মারণনেশা ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ার ঘটনা বিবিসি বাংলার কাছে তুলে ধরলেন বাংলাদেশের এক নারী।
ট্যাবলেটগুলো দেখে তিনি স্বামীর কাছে জানতে চান, ‘এগুলো কী’। জবাবে স্বামী বলেন, ‘এটা খুব ভালো জিনিস। এখন এটা সবাই খায়, মেয়েরাও খায়। আর তুমি তো আমার স্ত্রী। সুতরাং তুমিও আমার সঙ্গে খাবে।’
ওই নারী বলেন, তখন আমি মনে করলাম, যদি তার সঙ্গে বসে না খাই তা হলে হয়তো সে বাইরের মেয়েদের সঙ্গে গিয়ে খাওয়া শুরু করবে। তখন আমি তার সঙ্গে খাওয়া শুরু করি।
এভাবে কয়েক মাস ধরে স্বামী স্ত্রী মিলে বাড়িতে একসঙ্গে ইয়াবা খেতে থাকি।
তিনি বলেন, ‘তিন মাস পর আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি। এত শুকিয়ে যাই আমাকে ৮০ বছরের বৃদ্ধ মহিলার মতো দেখাত। শরীর পুরোটা কালো হয়ে গিয়েছিল। আমার শরীরে অর্ধেক কাপড় থাকত, অর্ধেক থাকত না। আমি সারাক্ষণ মাথা আঁচড়াতাম। মনে হতো মাথায় শুধু উকুন। যে দেখত সে আমাকে পাগল মনে করত।’
তিনি আরও বলেন, ‘মা যখন আসত তখন আমি তার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করতে শুরু করি। আমি চোখে অনেক কিছু দেখতে থাকি। মুরগির মাংস দেখলে মনে হতো তার ভেতরে অনেক কেঁচো। মাথার চামড়াকে মনে হতো লাল রক্ত। মনে হতো মাথা থেকে রক্ত পড়ছে। খেতেও পারতাম না। কিছু মুখে দিলে সেটা রবারের মতো শক্ত লাগত।’
ওই নারী বলেন, ‘তখন আমি খুব অসুস্থ। আমার মা একদিন ভাত মেখে আমাকে খাওয়াতে যাবেন, তখন আমার মনে হল আমাকে তিনি কেঁচো খাওয়াচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর আমি বমি করতে শুরু করি। তখন তারা আমাকে আমার মায়ের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্বামীকে না জানিয়েও আমার চিকিৎসা চলতে থাকে।’
তিনি বলেন, মায়ের বাসায় তিন বছরের মতো ছিলাম। তার পর নিজের বাসায় চলে যাই। তখন আবার স্বামী প্রত্যেক দিন ইয়াবা নিয়ে আসতে শুরু করে। প্রতিদিন রাতে সে ইয়াবা খেত। প্রত্যেক রাতে ২০টা করে খেত। সে নিজে নষ্ট এবং তার নোংরামির শিকার আমিও হয়েছি। তার পর আমি আবারও ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ি।’